Image

বাংলাদেশ

স্কুলে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত ছোট থেকেই মাসুকা শিক্ষক হতে চেয়েছিলেন, দুর্ঘটনার সময় শ্রেণিকক্ষে পড়াচ্ছিলেন

Image

শাহাদৎ হোসেনব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৫, ৯:৪৭ সকাল

5
Shares

Image

ছোটবেলা থেকেই শিক্ষক হতে চেয়েছিলেন মাসুকা বেগম। পড়ালেখা শেষে বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। চার বছর আগে তিনি যোগ দেন রাজধানী ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। গত সোমবার সেখানে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন মাসুকা। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত মাসুকা বেগম ওরফে নিপু (৩৮) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা চিলোকুট গ্রামের চৌধুরী বাড়ির সিদ্দিক আহমেদের মেয়ে। তবে তাঁর পরিবারের সদস্যরা জেলা শহরের মেড্ডা সবুজবাগ এলাকায় থাকেন। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে মাসুকা সবার ছোট। তাঁর মা মারা গেছেন। বড় বোন পাপড়ি রহমানের শ্বশুরবাড়ি আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুরে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সোহাগপুর গ্রামে মাসুকা বেগমকে দাফন করা হয়েছে।  উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ৩২। অগ্নিদগ্ধ হয়ে যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি আছেন, তাঁদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার সময় স্কুলে ক্লাস নিচ্ছিলেন মাসুকা বেগম। তিনি ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক। তাঁর শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। তাঁকে উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। পরে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী গতকাল বিকেলে তাঁর মরদেহ বড় বোনের শ্বশুরবাড়ি আশুগঞ্জের সোহাগপুরে নেওয়া হয়। বিকেল ছয়টায় তাঁর লাশ দাফন করা হয়। তাঁকে শেষবারের মতো দেখতে স্বজনেরা জড়ো হন। গ্রামে শোকের পরিবেশ তৈরি হয়। মাসুকার বোনের স্বামী খলিলুর রহমান বলেন, ‘সোমবার বিমান দুর্ঘটনার পর থেকেই মাসুকার কোনো খোঁজ পাচ্ছিলাম না। ঘণ্টাখানেক পর একজন ফোন ধরে বলল, “মাসুকা আহত হয়েছে।” ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর কোনো সন্ধান পাচ্ছিলাম না। রাত নয়টার দিকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে আহতদের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। ওই তালিকায় মাসুকার নাম পাওয়া যায়। তাঁর সহকর্মী জানান, মাসুকার কণ্ঠনালিসহ শরীরের ৮৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে; বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কম। এরপর রাত সাড়ে ১২টায় মাসুকার মৃত্যুর খবর পাই।’ খলিলুর রহমান আরও বলেন, মাসুকা মনপ্রাণ দিয়ে শিক্ষকতা করত। তাঁকে বিয়ের কথা বললে সে বলত, ‘বিয়ে করব না। শিক্ষার্থীরাই আমার সন্তান।  নিহত মাসুকার বাবা সিদ্দিক আহমেদ বলেন, ‘১৫ বছর আগে মাসুকার মা মারা যায়। শিক্ষকতা ও আমাদের সংসারের জন্য সে আর বিয়ে করতে চায়নি। মাসুকা নিয়মিত আমার খোঁজখবর নিত; প্রতি মাসে টাকা পাঠাত। ১০-১৫ দিন আগে তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছিল। এত অল্প বয়সে মেয়ে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে, কখনো ভাবিনি।’ ভাগনি ফাহমিদা খানমও জানান, তাঁর খালা মাসুকা বেগম শিক্ষকতা পেশাকে খুব ভালোবাসতেন। তিনি বলেন, ‘আমার খুব আদরের আন্টি (মাসুকা) ছিলেন। আমিও তাঁর খুব প্রিয় ছিলাম। কয়েক দিন আগে তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছিল। তখন পরিবারের সবার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন। আমাদের বাড়িতে নিয়মিত আসতেন।’

সুত্র: আরটিভি

বাংলাদেশ
আরটিভি
জাতীয়
রাজনীতি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
সারজিস আলম
ডিজিটাল প্রযুক্তি
শ্লীলতাহানি
আওয়ামী লীগ
সমন্বয়ক
শীর্ষ খবর
Image

আরো খবর

ImageImage