শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫, রাত ১২:১৭ সময়
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১ জুলাই ২০২৫, ৩:০০ দুপুর
যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি সহায়তা (ইউএসএআইডি) কমানোর মতো ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে ১ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে, যার মধ্যে ৫ বছরের কম বয়সী ৪৫ লাখ শিশুও অন্তর্ভুক্ত। সোমবার (৩০ জুন) প্রভাবশালী চিকিৎসা ও জনস্বাস্থ্য সাময়িকী দ্যা ল্যানসেটের প্রতিবেদনে এ শঙ্কার কথা জানানো হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য বন্ধের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের মধ্যে ১৪ লাখ অকাল মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়াও এক-তৃতীয়াংশ শিশু অকালে মারা যেতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। বার্সেলোনা ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথের গবেষক এবং গবেষণার সহ-লেখক ডেভিড রাসেলা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তের কারণে অনেক নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের যে ধাক্কা আসবে তা বিশ্বব্যাপী মহামারী বা একটি বৃহৎ সশস্ত্র সংঘাতের সমান হবে।’ গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিশ্বব্যাপী ইউএসএআইডির সাহায্য কর্মসূচিতে তহবিল কর্তন করা হয়েছে। মার্কিন সরকার বলেছে, অপচয় দূর করার বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ এটি। মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ এবং সমর্থকরা এই কাটছাঁটের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন। গবেষণা বলছে, ইউএসএআইডির তহবিল বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মূলত নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে, বিশেষ করে আফ্রিকান দেশগুলোতে মহামারি ও দুর্ভিক্ষ রোধে গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি পরিচালিত হয়েছে এই তহবিলের আওতায়। গবেষণায় অনুমান করা হয়েছে, গত দুই দশক ধরে, ইউএসএআইডির অর্থায়নে পরিচালিত কর্মসূচিগুলো বিশ্বব্যাপী ৯ কোটি ১০ লক্ষেরও বেশি মৃত্যু রোধ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ৩ কোটি শিশুও। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সহায়তা দাতা দেশ, যা জাতিসংঘ কর্তৃক রেকর্ডকৃত সমস্ত অবদানের কমপক্ষে ৩৮ শতাংশ। সরকারি তথ্য বলছে, গত বছর ৬১ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক সহায়তা বিতরণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যার অর্ধেকেরও বেশি ইউএসএআইডির মাধ্যমে। গবেষণায় বলা হয়েছে, ‘আমাদের অনুমান অনুসারে, ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে ঘোষিত এবং বাস্তবায়িত আকস্মিক তহবিল কর্তনের নীতি যদি বাতিল না করা হয়, তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যে এড়ানো সম্ভব এমন বিপুল সংখ্যক মৃত্যু।’ এর আগে গত মার্চ মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছিলেন, ট্রাম্প প্রশাসন ছয় সপ্তাহের পর্যালোচনার পর ইউএসএআইডির সমস্ত কর্মসূচির ৮০ শতাংশের বেশি বাতিল করেছে।